হাদিসের বর্ণনায় কালোজিরা


EDITOR প্রকাশের সময় : অক্টোবর ২৮, ২০২৪, ৮:৪০ পূর্বাহ্ন /
হাদিসের বর্ণনায় কালোজিরা

প্রাচীনকাল থেকে কালোজিরে মানবদেহের নানা রোগের প্রতিষেধক এবং প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। এ জন্যই এই জিনিসটিকে অনেকে কালো হিরা বলেন। এটি শুধুই একটি মশলা নয়। তার কাজ শুধু খাবারের স্বাদ বৃদ্ধিতেই নয়, আয়ুর্বেদিক ও কবিরাজি চিকিত্সাতেও কালোজিরার ব্যবহার হয়। কালোজিরার বীজ থেকে একধরণের তেল তৈরি হয়, যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে আছে ফসফেট, আয়রন এবং ফসফরাস। এছাড়াও কালোজিরা বিভিন্ন রোগের হাত থেকে দেহকে রক্ষা করে।

তাই এই বিস্ময়কর এই জিনিসটির প্রশংসা করেছেন, খোদ রাসুল (সা.)। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, কালো জিরা সকল প্রকার রোগের উপশম আছে-তবে ‘আস্সাম’ ব্যতীত। আর ‘আস্সা-ম’ হলো মৃত্যু। এর ‘আল হাব্বাতুস্ সাওদা’ হলো (স্থানীয় ভাষায়) ‘শূনীয’ (অর্থাত্- কালো জিরা)। (মুসলিম, হাদিস : ৫৬৫৯)

তাই যেকোনো রোগ নিরাময়ে, রোগ থেকে নিরাপদ থেকে অন্যান্য সতর্কতার পাশাপাশি অভিজ্ঞ চিকিত্সকের পরামর্শক্রমে কালো জিরা সেবন করা যেতে পারে। আয়ুর্বেদিক, ইউনানি ও কবিরাজি চিকিত্সাতে এর ব্যাপক ব্যবহার হয়ে থাকে। তাই যারা এ সমস্ত চিকিত্সা নিয়ে গবেষণা করে, তাদের কাছে রোগ অনুযায়ী সঠিক ব্যবহারবিধি পাওয়া যাবে। কারণ প্রতিটি ওষুধের ব্যবহারবিধি রোগবেধে ভিন্ন ভিন্ন হয়। কখনো নির্দিষ্ট পরিমাণে খেতে হয়, কখনো নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে ব্যবহার করতে হয়। যেমন সাহাবায়ে কেরামও বিশেষ পদ্ধতিতে কালোজিরা ব্যবহার করেছেন।

খালিদ ইবনে সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা (যুদ্ধের অভিযানে) বের হলাম। আমাদের সঙ্গে ছিলেন গালিব ইবনে আবজার। তিনি পথে অসুস্থ হয়ে গেলেন। এরপর আমরা মদিনায় ফিরলাম তখনও তিনি অসুস্থ ছিলেন। তাঁকে দেখাশুনা করতে আসেন ইবনে আবি আতিক। তিনি আমাদের বললেন, তোমরা এ কালো জিরা সাথে রেখ। এর থেকে পাঁচটি কিংবা সাতটি দানা নিয়ে পিষে ফেলবে, তারপর তন্মধ্যে জয়তুনের কয়েক ফোঁটা তৈল ঢেলে দিয়ে তার নাকের এ দিক-ওদিকের ছিদ্র দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা করে প্রবিষ্ট করাবে। কেননা, আয়েশা (রা.) আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন যে, তিনি নবী (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, এই কালো জিরা ‘সাম’ ছাড়া সব রোগের ঔষধ। আমি বললাম, ‘সাম’ কী? তিনি বললেন, মৃত্যু। (বুখারি, হাদিস : ৫৬৮৭)

অতএব, আমরাও নবীজি (সা.)-এর সুন্নতকে ভালোবেসে নিয়মিত কালোজিরা সেবন করতে পারি। ইনশাআল্লাহ এতে সুন্নত পালনের সওয়াবের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি থেকে আরোগ্য লাভ করা যাবে।