উন্মোচনের পথে হাসিনার গুম-রহস্য


EDITOR প্রকাশের সময় : নভেম্বর ১৩, ২০২৪, ৪:৩৮ পূর্বাহ্ন /
উন্মোচনের পথে হাসিনার গুম-রহস্য

ঘরে ঘরে ওঠে ক্রন্দনধ্বনি আওয়াজ শুনছি তারি/ ওকি বাতাসের হাহাকার!/ ও কি রোনাজারি ক্ষুধিতের!/ ও কি দরিয়ার গর্জন, /ও কি বেদনা মজলুমের!/ও কি ধাতুর পাঁজরায় বাজে মৃত্যুর জয়ভেরী..। কবি ফররুখের ভাষায় এভাবেই বিবৃত হয়েছে মজলুমের দুঃসহ দিন। আওয়ামী জমানার দুুঃশাসনের রজনী ভেদ কর উঠেছে নতুন সূর্য। মজলুম মানুুষ অন্তত জায়গা খুঁজে পেয়েছে নালিশ জানানোর। ভয়ের কালো নেকাব ফেঁড়ে নিপীড়িতরা বেরিয়ে আসছেন দলে দলে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব চিরস্থায়ী করতে নিরপরাধ মানুষের ওপর কতটা জুলুম চালিয়েছে, নালিশে উঠে আসছে তারই উৎকট বর্ণনা। ‘গুম কমিশন’র টেবিলে জমা পড়েছে গুমের শত শত অভিযোগ। গত ৪ নভেম্বর সংস্থাটি সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছে ওই দিন পর্যন্ত জমা পড়া অভিযোগের সংখ্যা এক হাজার ৬শ’। এসব অভিযোগে বিধৃত হয়েছে ভুক্তভোগীদের গুমকালীন দুঃসহ স্মৃতি আর কান্নাভেজা কষ্টগাথা। অনুসন্ধান-তদন্তের স্বার্থে এখনই প্রকাশ করা হচ্ছে না সেসব। কমিশন রাত-দিন কাজ করছে হাসিনা শাসনামলে সংঘটিত ‘গুম-রহস্য’ উন্মোচনে। চেষ্টা চলছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রতিবেদন দাখিলের।

কমিশন সূত্র জানায়, গুলশানস্থ কমিশন কার্যালয়েই অধিকাংশ অভিযোগ জমা পড়ে। এর বাইরে আরো দুইটি পয়েন্টে অভিযোগ জমা পড়ে। একটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন ইউনিট। আরেকটি ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। পরে সেগুলো ফরোয়ার্ডিংসহ পাঠিয়ে দেয়া হয় কমিশনে। কমিশন বাছাই ও প্রাথমিক তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করবে সরকারের কাছে। সরকার বিচার নিশ্চিত করবে।

কমিশনের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে গুমের শিকার মানুষগুলোর যন্ত্রণাদায়ক দুঃসহ স্মৃতি। কিন্তু হাসিনার গুমকাণ্ডের সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট তারা অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে মানুষের মনোযোগ এদিক-ওদিক সরিয়ে নিতে চাইছে। নিত্য-নতুন অবান্তর ইস্যু তুলে হাসিনার দেড় দশকের গুম এবং জুলাই-আগস্ট গণহত্যার স্মৃতি দ্রুত ধুয়ে ফেলতে চাইছে। দ্রব্যমূল্য, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, যানজট, পথ চলাচলে নিত্য দুর্ভোগকে আওয়ামী জমানার দেড় দশকের সঙ্গে এখনই তুলনা করতে চাইছে অপরাধ-সংশ্লিষ্টরা। যদিও এ বিষয়গুলো হাসিনারই দুঃশাসনের পরম্পরা। ডলার সঙ্কট হাসিনার সৃষ্টি। এ সঙ্কটের ধাক্কা সামলে নেয়া দু-চার মাসেই সম্ভব নয়। মানুষকে এর জের টানতে হচ্ছে দ্রব্যমূল্য দিয়ে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও হাসিনার সৃষ্টি। আওয়ামীকরণ করে পুলিশ বাহিনীকে ধ্বংস করেন হাসিনা। সর্বশেষ জুলাই-আগস্ট গণহত্যায় পুলিশকে ব্যবহার করে মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা। পুলিশে মনোবল ফেরানো সময়সাপেক্ষ। এ সুযোগ তো হাতছাড়া করছে না ওঁৎ পেতে থাকা চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসীরা। এ রকম প্রতিটি ইস্যুই অভিনব ও আকস্মিক নয়। অথচ পুরনো ইস্যুগুলোকেই পুঁজি করছে ফ্যাসিবাদের অন্ধ সমর্থকরা। উদ্দেশ্য, তাদের কৃত অপরাধ, গণহত্যা, দেড় দশকের গুম-খুন, হামলা-মামলা, ঋণের নামে ব্যাংক লুটের টাটকা ইস্যুকে ফিকে করে ফেলা।

অবশ্য আশার বাণী শোনালেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। গতকাল মঙ্গলবার এ প্রতিবেদককে তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার গুম-খুন, গণহত্যার দুঃসহ স্মৃতি মুছে ফেলা সম্ভব নয়। আগামী সপ্তাহে ট্রাইব্যুনালে (১৮ নভেম্বর) মানবতাবিরোধী অপরাধে গ্রেফতারকৃতদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করার তারিখ ধার্য রয়েছে। আশা করছি বিস্মৃতির ধুলো দেশবাসীর স্মৃতিতে প্রলেপ ফেলতে পারবে না। তিনি বলেন, আপনারা জানেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অনেকগুলো মামলা হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল মামলা আমলে নিয়ে শেখ হাসিনাসহ অন্য আসামিদের গ্রেফতার করে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন। মামলা হচ্ছে, আরো হবে। আজ (গতকাল মঙ্গলবার) র‌্যাবের গুলিতে পা হারানো লিমন এসে অভিযোগে দিয়ে গেছেন। গুমের অভিযোগও জমা পড়ছে। পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমরা সেগুলো পাঠিয়ে দিচ্ছি ‘গুম কমিশন’-এ। ‘গুম সংক্রান্ত অভিযোগে ভুক্তভোগীরা কী ধরনের বর্ণনা দিচ্ছেন?’Ñ জানতে চাইলে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, আপাতত আমরা সেসব ডিসক্লোজ করছি না। এতে আলামত বিনষ্ট করা হতে পারে। গুমকারীরা পালিয়ে যেতে পারেন। তবে কতটা ডিসক্লোজ করা যেতে পারেÑ সে বিষয়ে আমরা ভাবছি।

এদিকে রাজধানীসহ আশপাশ এলাকায় অন্তত ৮টি গোপন বন্দিশালার (আয়না ঘর) খোঁজ মিলেছে বলে জানিয়েছে গুম কমিশন। এসব বন্দিশালার কয়েকটি কক্ষে মাত্র তিন-চার ফুট জায়গার মধ্যে মানুষকে বন্দি রাখা হতো। হাসিনা উৎখাত হওয়ার পর এসব বন্দিশালার প্রমাণ মুছে ফেলার চেষ্টা চলে। সাংবাদিকদের ব্রিফিং করে গত ৫ নভেম্বর এ তথ্য জানিয়েছেন গুম তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি মাঈনুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি জানান, গুম কমিশনে ১৬শ’ অভিযোগ পড়েছে। এর মধ্যে ৩৮৩টি গুমের অভিযোগ যাচাই- বাছাই করেছে কমিশন। এগুলোর মধ্যে র‌্যাবের বিরুদ্ধে ১৭২টি, সিটিসির বিরুদ্ধে ৩৭টি, ডিবির বিরুদ্ধে ৫৫টি, ডিজিএফআইয়ের বিরুদ্ধে ২৬টি, পুলিশের বিরুদ্ধে ২৫টি এবং অন্যান্যের বিরুদ্ধে ৬৮টি গুমের অভিযোগ জমা পড়ে।

তিনি আরো জানান, ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার শাসনামলে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে অপহৃত হওয়া অন্তত ২শ’ জনের কোনো হদিস মেলেনি। তারা কোথায় আছেন, বেঁচে আছেন কী হত্যা করা হয়েছেÑ এ তথ্য নেই কারো কাছে।

কমিশন বলছে, নিখোঁজ এসব ব্যক্তির কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। তাদের সন্ধান পাওয়া কমিশনের অন্যতম লক্ষ্য। কমিশন থেকে জানানো হয়, গত আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ভারতে পালিয়ে যান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে তার টানা ১৬ বছরের কঠোর শাসনের অবসান ঘটে। হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শত শত রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা এবং বেআইনিভাবে অপহরণ ও গুম করার অভিযোগ।

কমিশনের সদস্য নূর খান লিটন জানান, কমপক্ষে ২০০ জনের এখনো খোঁজ মেলেনি। আমরা তাদের সন্ধানে কাজ করছি। রাজধানীসহ আশপাশ এলাকায় অন্তত ৮টি গোপন বন্দিশালার সন্ধান মিলেছে। এসব বন্দিশালার কয়েকটি কক্ষে মাত্র তিন-চার ফুট জায়গার মধ্যে মানুষকে বন্দি রাখা হতো। কক্ষগুলোর দেয়ালে আটক ব্যক্তিদের হাতে আঁকা দিন গণনার চিহ্ন দেখা গেছে। ঢাকার মধ্যে র‌্যাবের তত্ত্বাবধানে বেশ কিছু টর্চার সেল কমিশন পরিদর্শন করেছে, যা খুবই ভয়ঙ্কর।

আরেক কমিশনার জানান, হাসিনার পতনের পর অজ্ঞাত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসব গোপন বন্দিশালার প্রমাণ মুছে ফেলার চেষ্টা চালায়। অধিকাংশ নিখোঁজের ঘটনায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-কে দায়ী করে অভিযোগ পাওয়া গেছে। হাসিনার সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহম্মেদ সিদ্দিকীর নিয়ন্ত্রণাধীন ডিজিএফআই, র‌্যাব, পুলিশ, ডিবি, সিটিটিসি, সিআইডির অনেক কর্মকর্তা গুমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। রাজনৈতিক কারণ ছাড়াও সরকারের সমালোচনা করায় অনেকে গুমের শিকার হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি গুমের ঘটনা ঘটিয়েছে র‌্যাব। এ সংখ্যা ১৭২টি।

এদিকে গত ৯ নভেম্বর গুম অনুসন্ধান কমিশনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস কমিশনসে সব ধরনের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। কমিশনের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, আপনাদের যা কিছু প্রয়োজন তার সব দেবো এবং সব ধরনের সহায়তা করবো।

কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, তারা ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় ১৬০০টি অভিযোগ পেয়েছেন। ৪শ’টি অভিযোগ যাচাই-বাছাই করেছেন। ১৪০ অভিযোগকারীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন।

কমিশনের একজন সদস্য ওই বৈঠকে বলেন, অভিযোগের সংখ্যা দেখে আমরা আশ্চর্য হয়ে গেছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রতিশোধের ভয়ে অনেকে এখনও কমিশনে আসছেন না। এ থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, ঘটনার সংখ্যা এখন পর্যন্ত যতটা রিপোর্ট করা হয়েছে, প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়ে অনেক বেশি।

ওই বৈঠকে কমিশন সদস্যরা জানান, গুমের শিকার অনেকে কারাগারে রয়েছেন। কেউ কেউ মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হয়েছেন। কারণ তাদের গ্রেফতার দেখানোর পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য করা হয়েছিল। কিছু গুমের শিকার ব্যক্তি ভারতের কারাগারে বন্দি রয়েছেন বলেও ধারণা কমিশনের। কমিশন সদস্যরা দীর্ঘদিন গুম করে রাখা গোপন স্থানের আলামত রক্ষার জন্য সরকারের সহায়তা কামনা করেন। এসব স্থানে গুমের শিকার ব্যক্তিদের লুকিয়ে রাখা হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের গুম-রহস্য উদঘাটনের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত ২৭ আগস্ট ‘গুম তদন্ত কমিশন’ গঠন করে। এ কমিশনের কাছে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সংঘটিত গুমের ঘটনায় ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত অভিযোগ জানান ভুক্তভোগীরা। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী এ কমিশনের চেয়ারম্যান। কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেনÑ হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত বিচারপতি মো: ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাবিলা ইদ্রিস ও মানবাধিকারকর্মী সাজ্জাদ হোসেন। ব্যাপক ক্ষমতাসম্পন্ন ‘গুম তদন্ত কমিশন’র কার্য-পরিধি নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এ অনুযায়ী কমিশন এক. ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, তদন্তকারী সংস্থা এবং অনুরূপ যেকোনো বাহিনী বা সংস্থার কোনো সদস্য বা সরকারের মদদে, সহায়তায় বা সম্মতিতে কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তি-সমষ্টি কর্তৃক ‘আয়নাঘর’ বা যেকোনো জ্ঞাত বা অজ্ঞাত স্থানে জোর করে গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান, তাদের শনাক্ত করা এবং কোন পরিস্থিতিতে গুম হয়েছিল তা নির্ধারণ করা এবং সে উদ্দেশ্যে গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যসহ যেকোনো ব্যক্তি বা সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা। দুই. বলপূর্বক গুম করার ঘটনাগুলোর বিবরণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করা এবং এ বিষয়ে সুপারিশ দেয়া। তিন. গুমের শিকার ব্যক্তিদের সন্ধান পাওয়া গেলে তাদের আত্মীয়স্বজনকে অবহিত করা। চার. গুমের ঘটনা সম্পর্কে অন্য কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান পরিচালিত তদন্তের তথ্য সংগ্রহ করা। পাঁচ. গুমকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করা এবং তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ দেয়া। ছয়. গুম প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় আইন সংস্কারের জন্য সরকারকে সুপারিশ করা। এবং সাত. উল্লেখিত উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট যেকোনো কাজ করা।
বেঁধে দেয়া হয়েছে কমিশনের কার্যপরিধি। এক. তদন্ত কমিশন বাংলাদেশের যেকোনো স্থান পরিদর্শন এবং যেকোনো ব্যক্তিকে কমিশনে তলব করতে ও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। দুই. তদন্ত কমিশন ‘কমিশনস অব ইনকোয়ারি অ্যাক্ট-১৯৫৬’ অনুসারে তদন্ত কাজ সম্পন্ন করে প্রজ্ঞাপন জারির তিন মাসের মধ্যে সরকারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল। তিন. মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ তদন্ত কমিশনকে সাচিবিক সহায়তাসহ সব ধরনের সহায়তা দেবে ও কমিশনের প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করবে। এ ছাড়া কমিশনকে সহায়তার উদ্দেশ্যে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত যেকোনো ব্যক্তিকে দায়িত্ব দিতে পারবে। চার. তদন্ত কমিশনের সভাপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারক এবং কমিশনের সদস্যরা হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারকের মর্যাদা এবং অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন। পাঁচ. ২০২৪ সালের ২৭ আগস্টের প্রজ্ঞাপন রহিত করে রহিতকৃত প্রজ্ঞাপনের অধীনে করা কাজ এই প্রজ্ঞাপনের অধীনে গণ্য বিবেচনা করা।