দেশে প্রাথমিক স্তরে পঞ্চম শ্রেণিতে বৃত্তি পরীক্ষার প্রচলন ছিল। বার্ষিক পরীক্ষার পর সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যবস্থাপনায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বৃত্তি পরীক্ষা হতো। ক্লাসের আগ্রহী ও রোল নম্বরে এগিয়ে থাকা শিক্ষার্থীরা এই পরীক্ষায় অংশ নিত। তাতে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পেত।
অবশেষে পুরোনো পদ্ধতিতে ফিরছে সেই পঞ্চম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা। এবারও ক্লাসের বাছাই করা ও আগ্রহী শিক্ষার্থীরা সুযোগ পাবে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার।
এর আগে ২০০৯ সাল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা চালুর পর পৃথকভাবে পরীক্ষা নিয়ে বৃত্তি দেওয়ার পদ্ধতি বাতিল করা হয়। এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে ফলাফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থী বৃত্তি পেত।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে ২০২০ সালে এ পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। পরে ২০২২ সাল থেকে স্থায়ীভাবে পিইসি পরীক্ষা বাতিল করা হয়। সে বছর জেএসসি পরীক্ষাও বাতিল করা হয়। ২০২৩ সাল থেকে চালু হওয়া নতুন শিক্ষাক্রমেও এ দুটি পরীক্ষা ছিল না।
ফলে পৃথকভাবে বৃত্তি পরীক্ষা হবে কি না, এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ২০২৩ সালের ৮ আগস্ট প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এক সভায় বৃত্তি পরীক্ষা স্থায়ীভাবে বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১’ বাতিল করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে ২০১২ সালে প্রণীত সৃজনশীল পদ্ধতি বহাল রাখা হয়েছে। এতে গতানুগতিক ধারায় আগের মতো বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। ফলে আগের নিয়মে বৃত্তি পরীক্ষা হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, আগামী শিক্ষাবর্ষে পুরোনো পদ্ধতিতে বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলমান। প্রাথমিকের সমাপনীর (পঞ্চম শ্রেণি) আগে পৃথক বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তবে সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন, দফায় দফায় পরীক্ষা নেওয়ায় শিক্ষার্থীদের ওপর মানসিক চাপ বাড়বে বলেই বৃত্তি পরীক্ষা বন্ধ করা হয়েছিল। এখন তা আবার চালু করলে কোচিং ও গাইড ব্যবসা রমরমা হতে পারে।
জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, এই বছর যেহেতু বই পরিবর্তন হয়েছে, তাই এই স্বল্প সময়ে বৃত্তি পরীক্ষা আয়োজন সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, আগামী বছর থেকে প্রাথমিকে বৃত্তি পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :